স্বাগত ২০২১: সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া •


নতুন বছরের প্রথম সূর্য উঠেছে আজ পূর্ব আকাশে। আজ নতুন দিন। মহাকালের চিরন্তন গতি প্রবাহে বিগত হয়ে গেল আরো একটি বছর। শুরু হলো ইংরেজি নতুন বছর ২০২১। নতুনের প্রতি মানুষের সব সময় থাকে বিশেষ আগ্রহ। থাকে উদ্দীপনা। আর নতুনের মধ্যেই তো নিহিত থাকে অমিত সম্ভাবনা। আর সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রুপ দিতে সুযোগ করে দেবে নতুন বছর। তবে সম্ভাবনার আলোতে আলোকিত বাংলাদেশে রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ।

বিশ্বময় পরিচিত কক্সবাজারের উখিয়ার সচেতন মহল বলছেন, রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনায় অগ্রাধিকার দিতে হবে নতুন চ্যালেঞ্জগুলোকে। এর মধ্যে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে। রয়েছে অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে আরো এগিয়ে নেওয়া এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখা।

তাদের মতে, বছরটা নতুন। তবে অনেক চ্যালেঞ্জই পুরনো। ২০২০ সাল শেষ হয়েছে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে ব্যর্থতা আর আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে। উখিয়ার সচেতন মহল বলছেন, ২০২১ সালেও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে থাকবে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। তবে রোহিঙ্গাদের জীবন দীর্ঘ হওয়ার মধ্যে কূটনৈতিক পাওয়া, আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিচারের মুখোমুখি হওয়া। আর মিয়ানমারের প্রতি জাতিসংঘের নিন্দা। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত সফলতা বয়ে আনেনি।

তিন বছর আগে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে যে বর্বরতা চালানো হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে মিয়ানমার ১৯৮৪ সালের আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশন ভঙ্গ করেছে বলে নভেম্বরে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) অভিযোগ করে পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্র দেশ গাম্বিয়া।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চরম নির্যাতনের শিকার মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের এ দেশে জায়গা দিয়ে আমরা স্থানীয়রা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। তাদেরকে আগামীর স্বপ্ন দেখিয়ে লাভ নেই। তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইনে দ্রুত ফেরত পাঠাতে হবে।

আরেক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির নেতা সাবেক উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখিয়ে লাভ নেই। তাদেরকে সম্মানের সাথে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে হবে।

সু-শাসনের জন্যে নাগরিক সুজনের সভাপতি ও আমরা কক্সবাজারবাসী উখিয়া শাখার সভাপতি সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, অভ্যন্তরিন কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে দেশের। বিশেষ করে দুর্নীতির লাগাম টেনে উন্নয়নকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। দুর্নীতি না হলে আজ আমাদের দেশের চেহারা পাল্টে যেত। রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবসা চলছে।

এনজিওগুলো রোহিঙ্গাদের পক্ষে কাজ করছে। তবে রোহিঙ্গারা সে দেশে ফিরে যাক তা এনজিওদের ইচ্ছে নেই। তারা এটিকে জিয়ে রাখতে চায়। সেখানেই স্থানীয়দের সাথে এনজিওদের বিরোধ। অনতিবিলম্বে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ফিরেয়ে দিয়ে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা হোক নতুন বছরের অঙ্গিকার।